মুরাবাহা পরিচিতি
ফয়জু ভাই চাকরি করেন একটি প্রাইভেট কোম্পানীতে। দেশের বাড়ীতে কিছু জমিন কিনবে ভাবছে। দেড় লক্ষ টাকার দরকার। উনি মাসে ৩০ হাজার বেতন পায়। পরিবারের সকল খরচের পর প্রতি মাসে দশ-বারো হাজার ভালোই থেকে যায়। কিন্তু এই টাকা দিয়ে কি আর এক সাথে কিছু করা যায়? তাই সহযোগীতা নিলো একদল যুবকের, শুরু করল লাভজনক ব্যবসা। তারা উনাকে দেড় লক্ষ টাকা দিয়ে জমি কিনে তারপর উনার কাছে এক লক্ষ সত্তর হাজার টাকায় বিক্রি করে দিলেন, যা উনি আস্তে আস্তে পরিশোধ করবেন। বেশ খুশি ফয়জু ভাই। এবার উনি জমিনের মালিক। এভাবেই মুরাহাবাহার মাধ্যমে আমরা লাভজনক ব্যবসা করে থাকি।
ব্যাংকিং মুরাবাহা
সুদমুক্ত লাভজনক ব্যবসার ক্ষেত্রে ইসলামী কোনো ব্যাংকে যদি লোকটি যায় এবং নিজের প্রয়োজনের কথা ব্যক্ত করে, তাহলে ইসলামী ব্যাংক তাকে সরাসরি ফান্ড সরবরাহের পরিবর্তে গ্রাহক যে পণ্য ক্রয়ের জন্য ফান্ড চেয়েছে, সেটা প্রথমে ব্যাংক নিজে ক্রয় করবে। এরপর তা মুরাবাহা ভিত্তিতে বাকিতে অধিক মূল্যে গ্রাহকের কাছে বিক্রি করে দেবে। যেহেতু এখানে গ্রাহক ব্যাংকে এসে পণ্য খরিদের জন্য ব্যাংককে প্রস্তাব করেছে, এরপর তার প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে ব্যাংক পণ্য খরিদ করে মুরাবাহা বিনিয়োগ করেছে, তাই তাকে আধুনিক আরবি ভাষায় ‘মুরাবাহা লিল-আমির বিশ-শিরা’ (ক্রয়ের আদেশদাতা ক্রেতার স্বার্থে মুরাবাহা চুক্তি করা) বলে।
মুরাবাহ বাস্তবায়নের স্তরবিন্যাস
মোট তিনটি স্তরে ব্যাংকিং মুরাবাহা সম্পন্ন হয়ে থাকে। যথাÑ ১. গ্রাহক, যে ব্যাংককে পণ্য ক্রয়ের আদেশ করেছে এবং ব্যাংক থেকে ক্রয়কৃত পণ্যটি কিনে নেবে বলে ওয়াদাও প্রদান করেছে। ২. ইসলামী ব্যাংক, যে গ্রাহকের আবেদন মঞ্জুর করে পণ্যটি নিজে বা গ্রাহককে প্রতিনিধি করে সরবরাহকারী থেকে ক্রয় করবে। ৩. সবশেষে গ্রাহক ইসলামী ব্যাংক থেকে ক্রেতা হিসেবে পূর্ব ওয়াদা অনুযায়ী পণ্য ক্রয় করে নেবে।
মুরাবাহা হলো একটি লাভজনক ব্যবসা
ওই তিনটি স্তর মূলত তিনটি আকদ বা চুক্তিকে অনিবার্য করে। প্রথম স্তরে গ্রাহক, ব্যাংকের সঙ্গে একটি ওয়াদা চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছে। ওই ওয়াদা রক্ষা করা আবশ্যক। দ্বিতীয় স্তরে ইসলামী ব্যাংক, যে পণ্যটি হয় নিজে বা গ্রাহককে প্রতিনিধি করে সরবরাহকারী থেকে ক্রয় করবে। গ্রাহককে প্রতিনিধি করা হলে গ্রাহকের সঙ্গে ব্যাংকের আকদুল ওয়াকালা বা ওয়াকালা চুক্তি কার্যকর হবে। তৃতীয় ও চূড়ান্ত স্তরে গ্রাহকের সঙ্গে ব্যাংকের মুরাবাহা ক্রয়-বিক্রয় চুক্তি কার্যকর হয়। শরিয়া দৃষ্টিকোণ থেকে ওই তিনটি স্তরে সংগঠিত আকদ বা চুক্তিগুলো সম্পূর্ণ পৃথক পৃথক হওয়া জরুরি। বিশেষ করে ওয়াকালাহ চুক্তি ও মুরাবাহা চুক্তি একই বৈঠকে হওয়া নিষিদ্ধ।
রেফারেন্স: আওয়ার ইসলাম ।
মুরাবাহার জন্য আবেদন করতে এই পেইজের নীতিমালাগুলো পড়ুন।
Pingback: খিদমাহ বিত তিজারাহ / ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ঋণ - পরিচিতি ও নীতিমালা - আল-আমানাহ